আমরা সবাই আকাশে ভেসে থাকা মেঘ দেখে ভাবি, এগুলো কতটা হালকা! কিন্তু সত্য হলো, মেঘের ওজন বিশাল হতে পারে। অবিশ্বাস্য শোনালেও, একটি সাধারণ কিউমুলাস মেঘের ওজন লাখ লাখ কেজি পর্যন্ত হতে পারে! আজ আমরা এই বিস্ময়কর তথ্যের গভীরে যাব এবং জানবো কিভাবে মেঘের ওজন পরিমাপ করা হয় এবং এর প্রভাব কী হতে পারে।
কীভাবে মেঘের ওজন পরিমাপ করা হয়?
বিজ্ঞানীরা মেঘের ওজন পরিমাপ করতে বিশেষ ফর্মুলা ব্যবহার করেন। সাধারণত একটি কিউমুলাস মেঘের ঘনত্ব প্রায় 0.5 গ্রাম প্রতি ঘনমিটার হয়। এখন, যদি একটি মেঘের গড় আকার হয় 1 কিউবিক কিলোমিটার, তাহলে—
- 1 কিউবিক কিলোমিটার = 1,000,000,000 (এক বিলিয়ন) ঘনমিটার
- প্রতিটি ঘনমিটারে 0.5 গ্রাম পানি
- তাহলে মোট ওজন = 500,000,000 গ্রাম বা 500,000 কেজি (500 টন!)
এটি শুধুমাত্র একটি ছোট কিউমুলাস মেঘের ওজন। বড় আকারের ঝড়ো মেঘের (কিউমুলোনিম্বাস) ওজন কয়েক মিলিয়ন কেজি হতে পারে!
তাহলে মেঘ আকাশে ভাসে কিভাবে?
প্রশ্ন জাগতে পারে, এত ভারী হলে মেঘ আকাশে ভাসছে কিভাবে? এর উত্তর হলো বায়ুর ঘনত্ব ও প্রবাহ। মেঘের কণাগুলো এতই ক্ষুদ্র যে তারা বাতাসে ভেসে থাকে, ঠিক যেমন ধুলোর কণা বাতাসে উড়তে পারে। তাছাড়া, উষ্ণ বাতাসের প্রবাহ মেঘকে উপরের দিকে ঠেলে দেয়, ফলে তারা সহজেই ভাসমান থাকে।
মেঘের ওজন কীভাবে আমাদের আবহাওয়ায় প্রভাব ফেলে?
মেঘের ওজন এবং ঘনত্ব আবহাওয়ার পরিবর্তনে বিশাল ভূমিকা রাখে। ভারী মেঘ সাধারণত বৃষ্টিপাতের কারণ হয়। যখন জলের কণা এত বেশি জমা হয় যে বাতাস তাদের ধরে রাখতে পারে না, তখন তারা বৃষ্টির ফোঁটায় পরিণত হয়ে মাটিতে ঝরে পড়ে।
অজানা বিস্ময়কর তথ্য
- গ্রীষ্মকালে সাদা তুলোর মতো দেখানো মেঘের ওজনও কয়েক লাখ কেজি হতে পারে!
- একটি বড় ঝড়ো মেঘ (Cumulonimbus) ৫০ লাখ কেজির বেশি ওজনের হতে পারে!
- প্রতিদিন পৃথিবীতে প্রায় ৫০০ কোটি টন বাষ্প মেঘে রূপান্তরিত হয়।
মেঘ দেখতে হালকা মনে হলেও, বাস্তবে এদের ওজন বিশাল! এটি প্রমাণ করে যে প্রকৃতি কতটা বিস্ময়কর এবং বিজ্ঞান কীভাবে আমাদের চারপাশের সাধারণ বিষয়গুলোর মধ্যেও চমকপ্রদ তথ্য খুঁজে পেতে সাহায্য করে। পরের বার যখন আকাশের দিকে তাকাবেন, ভাবুন তো—উপরের ওই তুলোর মতো নরম মেঘগুলোর ওজন কত হতে পারে!
এই তথ্য যদি আপনাকে অবাক করে থাকে, তাহলে শেয়ার করুন আর অন্যদেরও জানার সুযোগ দিন!
0 Comments